বিধবা হাজেরার চোখের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন মুরাদনগরের ওসি মো. শরিফুল আলম চৌধুরী,

মুরাদনগর (কুমিল্লা) থেকে:

ডান চোখে দেখতে পাচ্ছে না ৩২ বয়সী বিধবা হাজেরা। পেটের দায়ে মানুষের বাড়িতে ঝি এর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে হয় সহায় সম্বলহীন এ বিধবার। চলতি বছরের মে মাসে পাশের বাড়িতে ধান মাড়াইয়ের কাজ করতে গিয়ে ধান ছিটকে পড়ে তার বা চোখে মারাত্মক ক্ষতের সৃষ্টি হয়ে দিনকে দিন সেটি বড় হতে হতে বিশাল আকার ধারণ করে। আর এর ভেতরে তৈরি হয়েছে ক্ষত। এ কারণে নষ্ট হতে চলছিলো বিধবার একটি চোখ। চিকিৎসকরা অপারেশনের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু স্বামী হারা সহায় সম্বলহীন ওই বিধবার পক্ষে সেই অর্থ জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। ফলে অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে চোখ হারাতে বসছিলো দুই সন্তানের জননী এ অসহায় বিধবাটি। এ নিয়ে গত ২৩ জুন দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকায় ‘অর্থ সংকট: চিকিৎসার অভাবে চোখ হারাতে বসেছেন বিধবা হাজেরা’ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে দেখে ওই বিধবার চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়ার জন্য ভোরের কাগজ সাংবাদিক ও মুরাদনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক শরিফুল আলম চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করেন কুমিল্লার মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম মঞ্জুর আলম। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিধবাকে সবধরনের সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। গতকাল শনিবার বিকেলে মুরাদনগর থানার ওসি একেএম মঞ্জুর আলম বলেন, ‘মানবিকতার দৃষ্টি কোন থেকে দু’সন্তানের জননী এ বিধবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আমার সাধ্যমতো আমি চেষ্টা করছি। আজ শনিবার সাংবাদিকের মাধ্যমে ওই বিধবাকে ডেকে মুরাদনগর থানায় এনে তার চিকিৎসাসহ ঔষধপত্রের জন্য নগদ ৫০ হাজার টাকা তার হাতে তুলে দেন। এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, মুরাদনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা আমরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমিটির সভাপতি মো. শরিফুল আলম চৌধুরী, মুরাদনগর থানার দ্বীতিয় কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক গোফরান, কুমিল্লা উত্তর জেলা ওলামালীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কাজিয়াতল রহমানিয়া এতিমখানা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হাফেজ শুয়াইবুল হোসেন শাহজাহান মুন্সী, দারোরা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মো. কুদ্দুস মিয়া, কাজিয়াতল ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মো. সুজাত আলী ওরফে মাসুদ ও ওই বিধবার এক মাত্র স্কুল পড়–য়া ছেলে মাঝারুল ইসলাম প্রমূখ। বিধবা যাতে দ্রুত আরোগ্য লাভ করে তার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন বলে তিনি জানান। বিধবা হাজেরা এ মহুর্তে ঢাকা ইসলামী চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিধবা হাজেরা বলেন, ‘আমার মতো একজন গরীব মানুষের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে পাশে এসে দাড়িয়েছেন একজন পুলিশ। কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে ওই পুলিশ কর্মকর্তার জন্যও দোয়া চান তিনি। রোজী রৌশন আক্তার বলেন, স্থানীয় সাংসদ নিজাম হাজারী ৫০ হাজার এবং সরকারি পাইলট হাইস্কুল থেকে ১৩ হাজার টাকা চিকিৎসার জন্য পেয়েছেন। তিনি ছেলের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment